ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
আমাদের প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হয়। এতে রোদে, ধুলাবালিতে আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। আমাদের চারপাশে রয়েছে ত্বক ফর্সা করার নানা উপাদান।
যেগুলো দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজে অল্প সময়ে ত্বক ফর্সা করা সম্ভব। আপনাদের জন্য এখন এই আর্টিকেলে ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
- ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
- ত্বক ফর্সা করতে মসুর ডালের ব্যবহার
- ত্বক ফর্সা করতে দুধের ব্যবহার
- ত্বকের যত্নে লেবুর রসের ব্যবহার
- ত্বক ফর্সা করতে হলুদের ব্যবহার
- আলু ত্বক ফর্সা করতে ব্যবহার করুন
- ত্বক ফর্সা করতে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন
- পুদিনা পাতা ত্বক ফর্সা করতে ব্যবহার করুন
- ত্বক ফর্সা করতে চন্দনের ব্যবহার
- ত্বক ফর্সা করতে আরো যা যা করণীয়
- লেখকের শেষ কথা
ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
আপনি কি ত্বক ফর্সা করা নিয়ে খুবই চিন্তিত? তাহলে আপনি আমার এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এখান থেকে জানতে পারবেন ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আমাদের ঘরেই রয়েছে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করার অনেক ঘরোয়া উপাদান। যার সঠিক নিয়ম ও ব্যবহার সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না।
যার ফলে আমরা ত্বক ফর্সা করার জন্য বাজারের বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করে থাকি। এতে করে আমাদের ত্বক সাময়িকভাবে ফর্সা হয় কিন্তু পরবর্তীতে আবার আরো বেশি উজ্জ্বলতা হারায়। অনেক সময় বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকে ব্রণ, আলার্জি, র্যাশ প্রভৃতি নানা সমস্যা হয়ে থাকে। তাছাড়া কেমিক্যালযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক এ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
অনেক সময় কর্ম ব্যস্ততার কারণে বা সময়ের অভাবে ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে বিউটি পার্লারে যাওয়া হয় না। তাই আপনি চাইলে খুব সহজে অল্প সময়ে ঘরে বসে কিছু ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক স্থায়ীভাবে ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে। চলুন এখন তাহলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ত্বক ফর্সা করতে মসুর ডালের ব্যবহার
মসুর ডাল প্রোটিন জাতীয় একটা খাবার। এটি শরীরের পক্ষে যেমন উপকারী তেমনি ত্বক ফর্সা করার জন্য অনেক কার্যকরী। যুগ যুগ ধরে মসুর ডাল খাবারের পাশাপাশি ত্বক ফর্সা করার জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে। আমাদের দাদি নানি থেকে শুরু করে মা খালারাও ত্বকের যত্নে মসুর ডাল ব্যবহার করে এসেছেন। তারা কখনোই ত্বকের যত্নে রাসায়নিক প্রসাধনির উপর নির্ভর করেননি।
ফলে তাদের ত্বকে কোনদিন কোন সমস্যাও দেখা দেয়নি। মসুর ডাল ব্যবহারের ফলে ত্বক দ্রুত ফর্সা হয়। মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও প্রোটিন যা ত্বকের টিস্যু গুলোকে সজীব রাখে। মসুর ডাল ত্বকের ভেতরের ময়লা বের করে আনতে সাহায্য করে কেননা এতে রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন কে। এখন জেনে নেওয়া যাক যেভাবে আপনি মসুর ডাল ত্বক ফর্সা করতে ত্বকে ব্যবহার করবেন।
- মসুর ডাল কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে তা বেটে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর মুখে ভালো করে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকানোর পর ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক ফর্সা ও কোমল হবে।
- আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে মসুর ডালের পেস্ট এর সাথে দুধ মিশিয়ে তা মুখে লাগান এতে ত্বকের শুষ্কতা ভাব চলে যাবে।
- মসুর ডালের পেস্ট ও মধু একসাথে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন এতে আপনার ড্রাই ত্বক অনেক বেশি কোমল হবে।
- মসুর ডাল বাটা,হলুদের গুড়া,টক দই ও বেসন একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান এতে ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল ও কোমল হবে।
ত্বক ফর্সা করতে দুধের ব্যবহার
- এক চামচ বেসন এক চামচ মুলতানি মাটি ও দুই চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে তা মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকের ময়লা ভেতর থেকে উঠে আসবে এবং ত্বক হবে উজ্জ্বল ও ফর্সা।
- অর্ধেক পাকা কলা ভালো করে ম্যাশ করে তার সাথে দুই চামচ দুধ মিশিয়ে তা মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর হালকাগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এতে মুখ ফর্সা ও ময়শ্চারাইজড হবে।
- এক চামচ দুধ এক চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পরে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এতে আপনার ত্বক অনেক বেশি ফর্সা হবে।
- পাকা পেঁপে ম্যাশ করে তার সাথে দুধ ও মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বক অনেক বেশি ফর্সা হবে।
- এছাড়া আপনি চাইলে শুধু দুধ মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেললে তাতেও ত্বক অনেক বেশি ফর্সা হবে।
ত্বকের যত্নে লেবুর রসের ব্যবহার
ত্বক ফর্সা করতে হলুদের ব্যবহার
আলু ত্বক ফর্সা করতে ব্যবহার করুন
- মাঝারি সাইজের একটি আলু ছেঁচে রস বের করে নিয়ে তা টিস্যুর সাহায্যে ত্বকে লাগাতে হবে। বিশ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বক দাগমুক্ত ও ফর্সা হবে।
- এক চামচ গ্রেট করা আলু ও আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এক চামচ গ্রেট করা আলু এক চামচ গ্রেট করা টমেটো ও এক চামচ টক দই মিশিয়ে তা মুখের ত্বক এ ও গলায় লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- আলু ও স্ট্রবেরি গ্রেট করে এতে হাফ চামচ মধু মিশিয়ে তা ত্বক ফর্সা করতে এপ্লাই করতে পারেন।
- এক চামচ গ্রেট করা আলু,হাফ চামচ মুলতানি মাটি ও এক চামচ গোলাপজল মিশিয়ে তা ত্বকে লাগাতে পারেন।
-
আলুর খোসা পেস্ট করে তা ত্বকে লাগালে যে কোন ধরনের ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল ও
ফর্সা হয়ে থাকে।
- এছাড়াও আলু ও কিছু উপাদান মিশিয়ে তা ভালো করে জাল করে ক্রিম বানিয়ে তা ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক অনেক বেশি ফর্সা ও সুন্দর হয়। আপনি চাইলে উপরোক্ত যেকোনো একটি ঘরোয়া পদ্ধতি আপনার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বক ফর্সা করতে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন
- যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে একটি টমেটো রস বা টমেটো চটকে নিয়ে তা মুখে লাগিয়ে এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন এতে ব্রণের সমস্যা দূর হবে।
- ত্বকের লোমকূপ গুলো বড় হয়ে গেলে তা দিয়ে ময়লা ময়লা ও ধুলা মাটি প্রবেশ করে। ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই এক চামচ টমেটো রসের সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে তা তুলোর সাহায্যে মুখে লাগিয়ে নিন। এতে ত্বকের লোমকূপ গুলো সংকুচিত হ...
- আপনি যদি তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে সমস্যায় থাকেন তাহলে শসা ও টমেটো চটকে মুখে লাগান। তাহলে আপনার মুখের তৈলাক্ততা দূর হয়ে যাবে।
- টমেটো রসের সাথে বাদাম দুধ মিক্স করে মুখে লাগান। এতে আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর হবে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য টমেটো রসের সাথে মধু মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। এতে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে।
পুদিনা পাতা ত্বক ফর্সা করতে ব্যবহার করুন
ত্বক ফর্সা করতে চন্দনের ব্যবহার
- চন্দন পাউডারের সাথে সামান্য একটু পানি মিশিয়ে তা মুখে এপ্লাই কর্তু। কিছু সময় পর ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখে গ্লো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।
- চন্দন,হলুদ ও দই অথবা দুধ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে তা আপনার ত্বকে ব্যবহার কে। এতে খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল ও ফর্সা হওয়া যায়।
- চন্দনের সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে তা যদি আপনার ত্বকে ব্যবহার করেন। তাহলে দেখবেন কিভাবে আপনার ত্বক ফর্সা হচ্ছে।
- চন্দন ও নিমের পাতা পেস্ট বানিয়ে তা মুখে লাগাতে পারেন। এতে আপনার যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে তা দূর হয়ে যাবে।
- চন্দনের গুড়া ও বেসন সাথে সামান্য পানি অথবা দুধ মিশিয়ে মুখে লাগান। তারপর ২০-৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখের যদি চামড়া উঠে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে তা দূর হয়ে যাবে। তবে যাদের তৈলাক্ত স্কিন তারা দুধের পরিবর্তে পানি ব্যবহার করবেন।
- চন্দন ও অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিক্স করে তা ত্বকে লাগালে ত্বকের পোড়া ভাব দূর হয়ে যাবে।
- চন্দন ও কমলার খোসা পেস্ট করে তা ত্বকে লাগাল ত্বক অনেক বেশি ফর্সা ও কোমল হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url