এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। এলার্জি এমন একটি সমস্যা যা সম্পর্কে কমবেশি আমরা অনেকেই পরিচিত। এলার্জির কারণে অনেকেই অস্বস্তিকর অবস্থায় ভোগেন। এলার্জি শুধু চুলকানি নয় এর কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমনঃ হাঁচি-কাশি,শ্বাসকষ্ট,চোখ চুলকানো ইত্যাদি। 

এলার্জিতে-নিম-পাতার-ব্যবহার

এলার্জির সমস্যা সমাধানে অনেকে অনেক ওষুধ সেবন করেও কোন সমাধান মিলেনা উল্টো আরো সমস্যা সৃষ্টি হয়।কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে যা দিয়ে অ্যালার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এর মধ্যে নিম পাতা হচ্ছে অন্যতম প্রাকৃতিক উপাদান। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জি কি? এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জি বলতে সাধারণত এমন কিছু উপসর্গকে বোঝায় যেগুলো বিভিন্ন খাবার যেমন গরুর গোশত, হাঁসের গোশত,হাঁসের ডিম, দুধ ইত্যাদি খেলে আবার ধুলা মাটির সংস্পর্শে ও পারফিউমের কারণেও প্রকাশ পেয়ে থাকে। এটা শরীরে ফুসকুড়ি আকারে দেখা দিতে পারে আবার গোলাকার লাল লাল চাকা হয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলে যেতে পারে। এছাড়াও এলার্জি প্রভাবে চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখ চুলকায়, হাঁচি কাশি, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি দেখা দেয়। 

এসব সমস্যার সমাধানে অনেকেই অনেক রকম ওষুধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু তেমন কোন সমাধান মিলেনা। আপনি চাইলে প্রাকৃতিক কিছু উপাদান দিয়ে এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মধ্যে নিমপাতা অন্যতম সমাধান হতে পারে। নিমপাতার উপকারী কিছু গুণাবলী কারণে এলার্জি খুব সহজে দূর হতে পারে।

নিম পাতা কি? কেন উপকারী?

নিম গাছের পাতায় মূলত নিম পাতা। নিম গাছের পাতা, ছাল, কাণ্ড, ফুল, ফল সবকিছুই খুব মূল্যবান এবং ঔষধি গুণাবলীতে পরিপূর্ণ থাকে। তবে নিম পাতার উপকারিতা টা বেশি দেখা যায়। এটি প্রাচীন কাল থেকে ভেষজ চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিম পাতাতে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও এন্টি প্লেমেটরি গুনাবলি যা বিভিন্ন রোগ-নিরাময়ে সহায়ক। 

যুগ যুগ ধরে ত্বকের যত্নে,চুলের যত্নে ও বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে, এলার্জি, চুলকানিতে  নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম গাছ ও নিমপাতার যে কতটা উপকারী তা বলে শেষ করা যাবে না। নিম গাছের ছায়া অনেক শীতল হয়। নিম গাছের ডাল দিয়ে এসব করলে দাঁতের অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়।

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে অ্যালার্জি সমস্যায় ভোগেন তাহলে আপনি নিম পাতার ব্যবহার করে দেখতে পারেন । এতে আপনার সমস্যা দ্রুত সমাধান হতে পারে। এখন এই আর্টিকেলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে প্রায় বেশিরভাগ মানুষেরই এলার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। যার এলার্জি আছে সে জানে এটা কতটা অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে।

আরও পড়ুনঃ  

অনেকে এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকেন। এতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে এলার্জির ওষুধ খেলে অতিরিক্ত ঘুম হয়ে থাকে এবং ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে। এলার্জি থেকে আরো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন শ্বাসকষ্ট,হাঁচি কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। 

তাই এলার্জি সমস্যার সমাধানের নিম পাতার ব্যবহার হতে পারে কার্যকরী সমাধান। এলার্জিতে নিমপাতা  ব্যবহার করলে আপনি চিরতরে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাছাড়া নিমপাতা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হীন সহজলভ্য প্রাকৃতিক উপাদান যা এলার্জি নিরাময়ে অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন। যেভাবে  নিম পাতা এলার্জিতে ব্যবহার করতে পারেন তাহলোঃ

  • এক ১ থেকে দেড় কেজি নিমপাতা নিয়ে খুব ভালো করে ধুয়ে তা রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর তা গুঁড়ো করে কৌটায় সংরক্ষণ করতে হবে। তারপর হাফ চামচ নিম পাতার গুঁড়ো ও এক চামচ ইসবগুল ভিজিয়ে রেখে তা সকালে ও বিকালে খেতে হবে। যদি অতিরিক্ত তিতার কারণে খেতে না পারেন তাহলে এর সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে নিয়মিত একমাস খেতে পারলে এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • কিছু পরিমাণ নিমপাতা পানিতে মিশিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে এলার্জি অনেকটা উপশম হয়।
  • নিমপাতা বেটে তা এলার্জিতে ব্যবহার করলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।
  • হলুদ ও নিম পাতা বেটে শরীরে লাগালে এলার্জি কমে যাবে।

ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার এর পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও নিমপাতা ব্যবহার খুব উপযোগী। যুগ যুগ ধরে ত্বকের নানা সমস্যায় নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। আপনার ত্বকে যদি ব্রণ জনিত দাগ থেকে থাকে তাহলে নিমপাতা বেটে তা ত্বকে লাগালে ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। নিম পাতায় রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ব্রণ উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। 

তাছাড়া নিমপাতা ত্বকের দাগ ছোপ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ যেমন ফাঙ্গাল ইনফেকশন দাদ চুলকানি ইত্যাদি থাকলে নিমপাতা পানির সঙ্গে সিদ্ধ করে সিদ্ধ করে সে পানিতে গোসল করলে সংক্রমণ কমে যায়। এ ছাড়া ত্বক ফর্সা করতে নিম পাতার পেস্টের সাথে মধু মিশিয়ে তা ত্বকে এপ্লাই করলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়ে ত্বককে করে তোলে ফর্সা ও সুন্দর।

চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার

শুধু যে এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে থাকে তা কিন্তু নয়। চুলের যত্নে নিমপাতা বহুকাল ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। নিমপাতা ব্যবহারের ফলে মাথার খুশকি দূর হয়। চুল অনেক বেশি মজবুত লম্বা ও ঘন হয়। এছাড়া নিম পাতা ব্যবহারের ফলে মাথার উকুন দূর হয়ে যায়।
  • নিম পাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে মাথা ও চুল ধুয়ে ফেলুন এতে নিম পাতার অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।
  • চুলের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে ও চুলের গোড়া মজবুত করতে নিম পাতার তেল চুলের গোড়ায় মেসেজ করুন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে।
  • চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনতে নিমপাতা বাটার সাথে টক দই মিশিয়ে তা চুলে লাগান এবং কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং চুল হবে অনেক বেশি সুন্দর।
  • নিম পাতা অথবা নিমের ফল বেটে তা মাথায় লাগালে মাথার উকুন দূর হয়ে যাবে।

রোগ প্রতিরোধে নিম পাতার ব্যবহার

নিমপাতা তে রয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক গুণাবলী যা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম পাতার এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিম পাতার গুনাগুন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। নিম গাছের পাতা, ডাল, ফুল, ফল সব কিছুই সব ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। নিম পাতায় এমন কিছু ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন ও ঠিক রাখে। সর্দি কাশির মতো রোগ নিরাময়ে ও নিমপাতা কবি কার্যকরী।
  • সকালের নিম পাতার রস খেলে শরীরের বিভিন্ন সংক্রমণ দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
  • নিম পাতা ফুটিয়ে সেই পানি পান করুন এতে শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর হবে।
  • নিম পাতাপুড়িয়ে সে ধোঁয়া ছড়িয়ে দিলে ম্যালেরিয়া বাহিত মশা ধ্বংস হয় যা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে অনেক বেশি কার্যকরী।

হজমে ও পেটের সমস্যায় নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জির পাশাপাশি হজমে ও পেটের সমস্যাতেও নিম পাতার ব্যবহার বেশ কার্যকরী। সকালে খালি পেটে কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে খেলে হজম ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে। যদিও নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়া অনেক বেশি কষ্টকর। তারপরও যাদের হজম ও পেটের সমস্যা আছে। তারা এ থেকে মুক্তি পেতে
চাইলে নিমপাতা খেতে পারেন এতে উপকার পাবেন।


তাছাড়া নিমপাতা তে রয়েছে ফাইবার। নিয়মিত নিম পাতা খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক, বদহজম ও পেটের নানা সমস্যা দূর হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে নিম পাতার রস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। সেই সাথে টয়লেট ক্লিয়ার হয়ে পেট পরিষ্কার হতে পারে। পেটে যদি কৃমি হয়ে থাকে তাহলে নিম পাতা খেলে অথবা নিম গাছের মূল গুড়া করে খেলে কৃমি দূর  হয়ে যাবে।

নিম পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে

নিমপাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি কার্যকর। নিমপাতা রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিমপাতা রক্তে সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বাড়ায়। নিমপাতা ডায়াবেটিসের কারণে সৃষ্ট সংক্রমণ ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। কচি নিমপাতার রস প্রতিদিন সকালে খেলে ডায়াবেটিসে অনেক উপকার পাওয়া যায়। 

পাঁচটি গোলমরিচ গোল মরিচ ও দশটি কোচি নিমপাতা সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস কমে। সুতরাং ডায়াবেটিস  নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিমপাতা খেতে একটু সমস্যা হলেও কষ্ট করে আপনি নিয়মিত সঠিক পরিমাণে নিম পাতা খেতে পারেন।

নিমপাতা ওজন কমাতে সাহায্য করে

নিম পাতা শুধু এলার্জিতে, ত্বকের সৌন্দর্যে বা চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কার্যকরী নয় এটি ওজন কমাতে ও  নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। নিম পাতা শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে ওজন কমতে শুরু করে। দুই তিন গ্লাস পানির সাথে কয়েকটি নিমপাতা ভালো করে ফুটিয়ে তার ভেতর আদা ও গোলমরিচ 

মিশিয়ে আরো ভালো করে ফুটিয়ে তা ছেকে নিয়ে সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে ওজন কমবে। এভাবে যদি আপনি টানা ১৫ দিন খেতে পারেন তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার ওজন কমা শুরু হয়ে গেছে।এ পানীয় পান করার এক ঘন্টা পর্যন্ত কিছু খাওয়া যাবেনা। তাছাড়া এ পানিও তৈরি করার সাথে সাথে খেয়ে নিতে হবে পরে খাওয়ার জন্য রেখে দেওয়া যাবেনা।

সংক্রমণ ও ক্ষত  নিরাময়ে নিমপাতা

নিমপাতা অ্যান্টিসেপটিক গুন সংক্রমণ ও ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। নিমপাতা বেটে পেস্ট করে তা ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে যায়। এছাড়া শরীরের কোন অংশ পুড়ে গেলে সেখানে নিমপাতা পেস্ট লাগালে দ্রুত নিরাময় হয় ও বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। বর্ষাকালে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে নিমপাতা। তাই আপনি চাইলে সংগ্রাম ও ক্ষত নিরাময়ে নিমপাতা সঠিক নিয়মে ও সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন।

নিম পাতার আরও ব্যবহার ও উপকারিতা

নিমপাতা বহুগুনে গুণান্বিত। এ রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক উপকারিতা। আপনার অনেক সমস্যা প্রাকৃতিক নিয়মের সমাধান করতে চাইলে নিয়মিত নিমপাতা ব্যবহার ও সেবন করতে পারেন। উপরিউক্ত আলোচনায় নিম পাতার অনেক ব্যবহার উপকরণতা সম্পর্কে জেনেছি। এছাড়া নিম পাতার আরো বহু বিধ গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে এখন আলোচনা করব।
  • নিম দাঁতের জন্য বিশেষ কার্যকরী। মুখে দুর্গন্ধ দূর করার ক্ষেত্রে নিমপাতার বেশ উপকার রয়েছে। নিম গাছের ডালের মেসওয়াক দিয়ে মেসওয়াক করলে মুখের দুর্গন্ধ চলে যায় ও দাঁত মজবুত ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
  • ক্ষুধা মন্দা ও অজীর্ণতা হলে নিমপাতা বেশ উপকার দেয়। পেটের বিভিন্ন সমস্যা যদি আপনার অজির্নতা হয়ে থাকে তাহলে নিয়মিত নিমপাতা সেবন করলে অজির্নতা দূর হবে।
  • নিমপাতা ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে বেশ কার্যকরী। ঠান্ডা জনিত কারণে বুকে ব্যথা, কফ দূর করতে নিমের পাতার রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • নিমের পাতা নিমের গাছের ছাল ফল বাতের ব্যথা নিরাময়ে অনেক উপকারী। বাতের ব্যথার কারণে নেমে তেল মালিশ করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
  • চোখ চুলকালে কয়েকটি নিম পাতা পানির সঙ্গে মিশিয়ে সেদ্ধ করে। তারপর সে পানি ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা হলে সে পানি দিয়ে চোখে ঝাপটা দিতে হবে। তাহলে চোখের চুলকানি কমে যাবে।
  • জন্ডিস রোগের ক্ষেত্রেও নিম পাতা বিশেষ কার্যকরী। সকালে খালি পেটে নিম পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে জন্ডিস থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়।
  • নিম পাতার রস নিয়মিত খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং রক্তে শর্করের মাত্রা কমে যায়।
  • নিম পাতার রস কৃমিনাশক ও উকুন নাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • এলার্জির পাশাপাশি চুলকানি, দাউদ, একজিমা ক্ষেত্রেও নিমপাতা বেশ কার্যকরী।

নিম পাতার অপকারিতা

নিম পাতার যেমন অনেক উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার সঠিক ব্যবহার ও নিয়ম না জেনে নিম পাতা ব্যবহার করলে অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতক্ষণ ধরে নিম পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এখন আলোচনা করব নিম পাতার অপকারিতা নিয়ে।
  • অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে এলার্জি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • অনেক সময় নিম পাতা খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • গর্ভবতী মায়েদের নিমপাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে
  • শিশুদের নিম পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
  • অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • নিমপাতা ব্যবহারের ফলে অনেক সময় ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।

নিম পাতা খাওয়া ও ব্যবহারের নিয়ম

নিম পাতার বিভিন্নভাবে খাওয়া ও ব্যবহার করা যায়। বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা ও খাওয়া যেতে পারে। নিম পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। আবার অনেকে নিমপাতা ভেজে তা ভাতের সঙ্গেও খেয়ে থাকেন। আগের দিনের মানুষ জ্বর হলে নিমপাতা রস করে অথবা ঝাল লবণ দিয়ে তেলে ভেজে তা ভাত দিয়ে খেতেন।

 
নিমপাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিমপাতা বেটে তার সঙ্গে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া নিমপাতা পানির সঙ্গে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও অ্যালার্জি চুলকানি সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাছাড়া নিমপাতা পানির সঙ্গে ফুটিয়ে সেই পানি সেবন করেও নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

তবে নিমপাতা খাওয়া ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক পরিমাণে সেবন ও ব্যবহার করতে হবে। নয়তো নিম পাতার উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হতে পারে। কোন কিছুই মাত্রাতিরিক্ত হওয়া ঠিক নয়। তাই নিম পাতা খাওয়া ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

লেখক এর শেষ কথাঃএলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

আজকের এই আর্টিকেলে এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনায় নিম পাতার ব্যবহার, উপকারিতা, অপকারিতা ও যাবতীয় দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিম পাতার যাবতীয় দিক সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করবেন এবং উপকৃত হবেন। আপনার বিভিন্ন সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে নিমপাতা। এলার্জির ক্ষেত্রে নিম পাতা অনেক বেশি কার্যকরী। 

তবে অবশ্যই নিম পাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। কেননা নিম পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা রয়েছে। সঠিক নিয়মে ও সঠিক পরিমাণে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারলে এর উপকারিতা বেশি পাওয়া যাবে। আমার এই আর্টিকেলে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনারা ক্ষমা করবেন এবং আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url